এই বইয়ের দুজন লেখকের বয়সই এখন ২৭ (সাকিবের আসলে ২৮. হিসাবের সুবিধার্থে ২৭ ধরে নিলাম আরকি। এই বই লেখার পরিকল্পনা শুরু হয় আরও দুই বছর আগে থেকে যখন আমরা ২৫ বছরের দুর্বার তরুণ আর মনে প্রতিবাদের তীব্র জ্বালা। ভেবেছিলাম একটি বই লিখে সমাজের নানা অসংগতি তুলে ধরব। লােকজনের নানা কটু কথার দাঁতভাঙা জবাব দেব। বেশ কিছু স্পর্শকাতর বিষয় নিয়েও আলাপ করব। কিন্তু তা করতে করতে দুই বছর পার হয়ে গেল কেন? আমরা আসলে এত দিন ভয় পাচ্ছিলাম যে লােকে বলবে, *এই দই ছােট্ট অনলাইন শিক্ষক আবার এসব নিয়ে কথা বলার কে? এদের নিজেদেরই তাে কোনাে অভিজ্ঞতা নেই। বয়স হয়েছে নাকি? বােঝে কম, বকে বেশি। আসলে তাদের লেখক হওয়ার শখ জেগেছে; তাই এসেছে জ্ঞান দিতে।’
পরে চিন্তা করে দেখলাম ‘লােকে কী বলবে?’ এই সংশয় যদি নিজেদের মধ্য থেকে দূর করতেই না পারি তবে এই বই লেখার কোনাে যােগ্যতাই আসলে আমাদের নেই। তারপর সব ভয়-সংশয় দূর করে লিখেই ফেললাম, লােকে কী বলবে?’ তারপর নিজেদের ভেতর থেকে চিরতরে তাড়িয়ে দিলাম ‘পাছে লােকে কিছু বলে’র ভয়। প্রিয় পাঠক, আমাদের ভয়, সংকোচ, সংশয় তাে তাড়িয়ে দিলাম, এবার আপনার পালা। আপনাকেও আমাদের দলে যােগ দেওয়ার অনুরােধ রইল। পাশে থাকব আমরা, ঢলুন, শুরু করা যাক।কীভাবে পড়বেন বইটি?
বইটি পড়তে পড়তে হয়তাে বেশ কিছু ব্যক্তিগত অভিধতার কথা আপনার মনে পড়ে যাবে- এমন কিছু কটু কথা মনে পড়ে যাবে যেগুলাে আপনাকে কিংবা আপনার সামনে কাউকে বলা হয়েছিল, কিন্তু আপনি তার কোনাে জবাব দিতে পারেননি। এই বইয়ে আমরা আপনার হয়ে সেই সব কথার জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছি। বইয়ের সাথে মিলে যায় এমন কোনাে কথা যদি আপনি কারও কাছ থেকে শুনে থাকেন তবে-
• মিলে যাওয়া অংশর্টির ছৰি তালে তাকে পাঠিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করুন, বইটির এই লেখাটুকু কেমন লেগেছে। উত্তরের অপেক্ষায় থাকার দরকার নেই। সে নিজেই বাকিটা বুঝে নেবে।
• যদি মনে করেন তাতেও কাজ হবে না তবে নির্বাচিত অংশটুকু দাগিয়ে (হাইলাইট করে) ছবি তুলে তাকে পাঠিয়ে দিন। কিংবা নির্বাচিত অংশটুকু হাইলাইট করে বইটি পড়া শেষে তাকে উপহার দিন। মানুষটি বুদ্ধিমান হলে, হাইলাইট দেখে যা বােঝার বুঝে যাবে।সতর্কীকরণ
বইয়ের কিছু চ্যাপ্টারের নাম পড়লেই আপনার মেজাজ খারাপ হতে পারে। আপনাকেও এটা শুনতে হয়েছিল। রাগ যেহেতু করবেনই তাই বই পড়ার আগেই রাগ কমানাের কিছু বন্দোবস্ত করে নিয়ে বইটি পড়া শুরু করেন না হলে পস্তুত পত্নতে কানও কথা মনে পড়ে যাবে আর তখন তাকে ফোন করে কাড়াকাড়ি শুরু করে দিতে পারেন। আমরা আবার শান্তিপ্রিয় মানুষ আর তাই চাই না আমাদের বইটি পড়ে কারও জীবনে যুদ্ধবিগ্রহ শুরু হােক। কি আরও একটু কমানাের জন্য এক গ্লাস পানি খেয়ে বইটি পড়া শুরু কুন। আর আরেকটা অনুরােধ, অনেক আগে যেসব কটু কথা মানুষের কাছ থেকে শুনেছেন, সেগুলাে এই বই পড়ে মনের ভেতর পুমে রাখবেন না; বরং সেই মানুষগুলােকে মন থেকে ক্ষমা করে দিন। এই রাগগুলাে নিজের মধ্যে পুমে রাখলে কিন্তু নিজেই কই পেতে থাকবেন। সামনের দিকে দেখুন। নিজেকে অভিবাদন জানান, কেননা আপনি সেই সব কটু কথা শুনেও আজ এই পর্যন্ত এসেছেন বা এনাে টিকে আছেন, এখনাে হেরে যাননি।
বইয়ের কিছু অংশ আমাদের থেকে নানা বয়সে বড় তাদের জন্য, আর বেশির ভাগ অংশই আমাদের বয়সী কিংবা আমাদের মেহের ছােট ভাইবােনদের জন্য লেখা। সে কারণেই এই বইয়ের কোনাে কোনাে জায়গায় পাঠককে ‘আপনি, আবার কোনাে কোনাে জায়গায় ‘তুমি বলে সম্বােধন করা হয়েছে।